অতিরিক্ত ঋণ দিতে গিয়ে নিজেদের বড় বিপদের মুখে ফেলেছে দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক। ফলে তীব্র আর্থিক সংকট দেখা দিয়েছে। এতে তাদের মূলধনের স্থিতিশীলতাকে নড়বড়ে করে তুলেছে। নতুন পরিকল্পনায় মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছে। এই সমস্যায় বেশি ভুগছে সরকারি-বেসরকারি ৭টি ব্যাংক।
সময়মত ঋণ আদায়ে ব্যর্থ এসব ব্যাংকগুলো ফলে তাদের কাঁধে এখন খেলাপির বোঝা হিসেবে ঝেঁকে বসেছে। ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের কোটা ৫৫ শতাংশ থেকে ৯৯ শতাংশের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো যখন এমন বাস্তবতার মুখোমুখি তখনই কেন্দ্রীয় ব্যাংক খেলাপি ঋণ ইস্যুতে নতুন নীতিমালা ঘোষণা করেছে। যা ব্যাংকগুলোর জন্য শাপে বর হয়ে উঠেছে। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বেসেল-ত এর সাথে মিল রেখে এই পরিবর্তন কার্যকর করা হয়েছে। নতুন বছরের এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে ঋণ শ্রেনিবিন্যাসের নতুন নিয়ম। এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হলে খেলাপি ঋণের পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাড়াবে তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন, যদি খেলাপি ঋণের পুরোপুরি তথ্য প্রকাশিত হয় তাহলে গ্রাহকদের আস্থা আরো তলানিতে গিয়ে পৌঁছাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী নানা উদ্যোগের পরেও বেসিক ব্যাংক খেলাপি ঋণ কমাতে সক্ষম হয়নি। ব্যাংকটির ৮ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে যা সরকারি ৬ টি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বড় পরিমাণ খেলাপি ঋণ। খেলাপিতে জনতা ব্যাংক রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। ৭ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে ব্যাংকটির। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শীর্ষে পদ্মা ব্যাংক। ৪ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে এই ব্যাংকের। এরপরে ন্যাশনাল ব্যাংক, যার খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, কার্পেটের নিচে ময়লা ডেকে রাখার দিন শেষ। ব্যাংক খাতে এখন পর্যন্ত নজিরবিহীন অনিয়মের চিত্র দেখা যাচ্ছে। এতে বিশাল এক খেলাপি ঋণের পাহাড় তৈরি হয়েছে। সামনেই এই খেলাপি আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আর কোনো খেলাপি গোপন রাখা হবে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইসলামি ব্যাংকগুলোর মধ্যে আইসিবি ইসলামি ব্যাংক খেলাপির শীর্ষে। ব্যাংকটির ৬৬৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। ব্যাংকটির ১ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রয়েছে। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে পুরো ব্যাংকিং ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি খেলাপি ঋণ রেকর্ড করেছে ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। ব্যাংকটির মোট খেলাপি ঋণ ১ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণ আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের সংখ্যা ৬১ টি। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ এসে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: জিটিভি
ভিডিও লিংক:https://www.youtube.com/watch?v=UTu-dcUW8fg
Stat News BD – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Stat News BD Offers To Know Latest National And Local Stories.