ফরিদপুরের কানাইপুরে ওবায়দুর খান (২৮) নামের এক যুবককে হত্যার ঘটনায় লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুর বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন ও তার ভাই খায়রুজ্জামান খাজাসহ এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানায় তারা।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে নিহত ওই যুবককে তুলে নিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ছোট ভাই খায়রুজ্জামান খাজার বিরুদ্ধে। এ সময় তার দুই চোখে পেরেকে ঢুকিয়ে খোঁচানো হয় এবং পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। পরে রাতে তাকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে মারা যান।
পরিবার ও স্বজনরা জানায়, ওইদিন বিকেলে কানাইপুর বিসিক শিল্পনগরীর মমতাজ ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেলের তেল কিনতে যায় ওবায়দুর। পেছন থেকে একটি প্রাইভেটকারে করে স্থানীয় খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে ১০-১২ জন মিলে তাকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ফরিদপুর জুট ফাইবার্স মিলের পেছনে খাজার বাড়ির পাশে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। এ সময় তার দুই চোখে পেরেক দিয়ে খোঁচানো হয় এবং বাম পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। পরে রাতে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
এদিকে, শনিবার নিহতের মরদেহ এলাকায় পৌঁছালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। এ সময় কয়েকশত বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এক পর্যায়ে তারা সড়কে বসে পড়েন। এ সময় দুইপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। বিক্ষুদ্ধরা এলাকাবাসী জানায়, ইউপি চেয়ারম্যানের হুকুমে তার ভাই ওবায়দুরকে হত্যা করেছে। তাদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
নিহতের বাবা বিল্লাল খান জানান, আমরা নায়াব আপার (কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ) লোক। বৃহস্পতিবার বিকেলে খাসকান্দি মোড়ে ইছা ভাইয়ের (জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা) মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য খাজা আমাদের বলে যায়। আমরা ওই মিটিংয়ে না যাওয়ার কারণেই আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি এই হত্যার বিচার চায়। ওর (খাজা) ফাঁসি না হলে আরও মানুষ মরবে। তিনি মোবাইলে খায়রুজ্জামান খাজার ছবি দেখিয়ে বলেন, খাজা আর আলতাফ চেয়ারম্যান অর্ডার দিয়েই আমার ছেলেকে মারছে। তবে, নিহতের বড় ভাই রাজীব খান জানান, বিভিন্ন সময় খাজার খারাপ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানাতো ওবায়দুর। একারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মেরে ফেলেছে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত খাজা। তার নামে এলাকায় খাজা বাহিনী গড়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের আমলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা আব্দুর রহমানের ছত্রছায়ায় ছিলেন তিনি। তৎকালীন সময়ে আব্দুর রহমানের হস্তক্ষেপে একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি থেকে খালাস পান। পরে এলাকায় ফিরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। গত ৫ আগস্টের পরে জেলা বিএনপির এক নেতার সমর্থক পরিচয়ে পুনরায় ত্রাসের রাজত্ব শুরু করেন। তার দলে না ভিড়লে হুমকি-ধমকিসহ করা হয় নির্যাতন।
Stat News BD – Most Popular Bangla News The Fastest Growing Bangla News Portal Titled Stat News BD Offers To Know Latest National And Local Stories.